ইকবাল খান: [২] দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পুলিশ-র‌্যাব ও বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী মাঠে থাকবে ১৩ দিন। আগামী ৭ জানুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ; এর আট দিন আগে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা ভোটের মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।

[৩] বিডিনিউজ জানায়, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-৬ পরিপত্র জারি করেছে। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, কমিশনের ‘ভেটিং’ শেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে মন্ত্রণালয় এ পরিপত্র জারি করেছে।

[৪] পরিপত্রে এসব বাহিনীর দায়িত্ব সম্পর্কেও বলা হয়েছে। ১১ কোটি ৯৭ লাখ ভোটারের এই নির্বাচনে ৪২ হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্র প্রতি ১৫-১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকবে। 

[৫] স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনী। ভোটের আগে-পরের ১৩ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্রবাহিনী মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া পুলিশ, আনসার-ভিডিপিসহ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষাকারী সদস্যরা পাঁচদিনের জন্য মোতায়েন থাকবে। ভোটের আগের দুদিন থেকে তাদের মোতায়েন করা হবে।

[৬] জাগোনিউজ জানায়, মেট্রোপলিটন এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ তিনজন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন থাকবে, আর গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ও অঙ্গীভূত আনসার থাকবে ১২ জন। বিশেষ এলাকার ভোটকেন্দ্রে (পার্বত্য ও দুর্গম এলাকায়) অস্ত্রসহ পুলিশ ২ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন থাকবে, আর গুরুত্বপূর্ণ ভোটবকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ও অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন, গ্রাম পুলিশ থাকবে ২ জন। অন্যদিকে এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ৩ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন আর গ্রাম পুলিশ থাকবে ২ জন।

[৭] পরিপত্রে বলা হয়, ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোটগ্রহণের আগের দুদিন, ভোটগ্রহণের দিন, ভোটগ্রহণের পরে একদিন এবং যাতায়াত ও অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য একদিনসহ মোট পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে।

[৮] গ্রাম পুলিশ-দফাদার/মহল্লাদার প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে একজন ক্ষেত্রবিশেষে দুজন করে পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। তবে অঙ্গীভূত/সাধারণ আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণের জন্য একদিনসহ মোট ছয়দিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে।

[৯] এতে আরও বলা হয়, পুলিশ কমিশনার/পুলিশ সুপার স্থানীয়ভাবে গুরুত্ব বিবেচনায় রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজন অনুসারে ভোটকেন্দ্রে পুলিশ এবং আনসার ও ভিডিপির সদস্য সংখ্যা কম-বেশি করতে পারবেন। যতদূর সম্ভব নারী ভোটকেন্দ্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নারী অঙ্গীভূত আনসার ও পুরুষ ভোটকেন্দ্রে পুরুষ অঙ্গীভূত আনসার নিয়োগ করতে হবে।

[১০] পরিপত্রে বলা হয়, নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র?্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়ন নিয়োগ করা হবে। আনসার ব্যাটালিয়ন সহযোগী ফোর্স হিসেবে পুলিশের সঙ্গে মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করবে। বাহিনীসমূহ আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৩ দিন নিয়োজিত থাকবে।

[১১] এছাড়া বিজিবি/আর্মড পুলিশ/আনসার ব্যাটালিয়ন জেলা/উপজেলা/থানাসমূহে এবং কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এলাকাসমূহে দায়িত্ব পালন করবে। আনসার ব্যাটালিয়ন সেকশন ফরমেশন অনুযায়ী সহযোগী ফোর্স হিসেবে পুলিশের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে।

[১২] নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোতায়েনকৃত আইনশৃঙ্খলাসহ সব বাহিনী রিটার্নিং অফিসারের কাছে রিপোর্ট করবে এবং রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্ত ও পরামর্শক্রমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবে বলে পরিপত্রে জানানো হয়েছে।

[১৩] স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৫ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।

[১৪] বিডিনিউজ জানায়, ৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় ট্যাক্সি, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল করতে পারবে না। ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করতে পারবেন না কেউ।